বাগেরহাট ১০:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই: ফয়েজ আহমদ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ৩০৭ Time View

স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক বিফ্রিফিংয়ে তিনি কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, যার দশ দিন অতিবাহিত হয়েছে। সময় শেষ হলেই তাদের লোকাল গেটওয়ে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট, ট্যাক্স আছে, তাই ডিভাইসের বিষয়ে এনওসি নেবে।

তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে, যা সাফল্যের নির্দেশনা প্রকাশ করে। প্রথমত, ৯০ দিন আগে বাংলাদেশে কোনো এনজিএসও (ননজিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স ছিল না। এই ৯০ দিনের মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশ একটি এনজিএসও গাইডলাইন তৈরি করেছে এবং সেটির অনুকূলে একটি অপারেটর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অপারেটর আবেদন করেছে, এবং সেই আবেদনটাও প্রসেস করে চার মাসের সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে এর মধ্যে এটি কমার্শিয়াল যাত্রা শুরু করতে পেরেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ধরনের টেলিকমিউনিকেশন লাইসেন্সের রোল আউটের ইতিহাসের প্রথম অনন্য ঘটনা।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো ফাইবার পৌঁছায়নি। মাত্র ৩০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার আছে। এমতাবস্থায় মোবাইল কোম্পানিগুলোর যে সেবা প্রদান করা হয়, সেটা মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে হয়, যেটা লো ক্যাপাসিটি। বাংলাদেশে এখনও হাজার হাজার মোবাইল টাওয়ার আছে যারা শুধু ৩০০ এমবিপিএস এর একটি ব্যান্ডউইডথ দিয়ে একটি মোবাইল টাওয়ার সচল রাখে ডেটা ইন্টারনেটের জন্য এবং সেই ডেটা ইন্টারনেটটি প্রায় কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা হয়। স্টারলিঙ্কের ক্ষেত্রে মাত্র একটি সেটআপ বক্স দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে।

স্টারলিংক কি উদ্যোক্তা বান্ধব? উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট সেবা প্রদানে কীভাবে স্টারলিংক ব্যবহার করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এনজিএসও বিধিবিধান এমনভাবে করেছি যেন স্টারলিংক বা সমজাতীয় ইন্টারনেট সুবিধা উদ্যোক্তাবান্ধব হয়। অর্থাৎ, একজন উদ্যোক্তা কিংবা একাধিক উদ্যোক্তা যদি ৪৭ হাজার টাকার একটি তহবিল গঠন করেন, এই তহবিলের মাধ্যমে তারা ইন্টারনেট সেটআপ বক্স কিনবেন। কেনার মাধ্যমে তারা তাদের আশেপাশের দোকানে এই ইন্টারনেটের বিক্রি/সেবা প্রদান করতে পারবেন। ওয়াইফাই রেঞ্জ আনুমানিক ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার, এই ৫০ মিটার জোনের মধ্যে বাংলাদেশের গ্রামের গ্রোথ সেন্টারগুলোতে অনেক দোকানপাট রয়েছে। সেখানে সহজেই ইন্টারনেট সেবা একজন ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে মাল্টিপল ব্যবহার সম্ভব। আইনে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়নি। এছাড়া শহরের বাসভবনে ওয়াইফাই শেয়ারিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব। স্টারলিংকের যেহেতু বিল্টইন রাউটার আছে, সেহেতু রাউটার হতে রাউটারে আইএসপি সেটআপেও ব্যবহার সম্ভব।

 

তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করব আমাদের মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি কিংবা ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশন কিংবা ব্যাংকের জন্য, যাতে এই স্টারলিংক উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থের সংস্থান হয়। পাশাপাশি যারা নাগরিক সেবার উদ্যোক্তা হবেন, তাদের জন্য স্টারলিংক কীভাবে সহজে নেওয়া যায়এর জন্যও আমরা ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজে কাজ করার পরিকল্পনা করছি। আমরা বলছি, স্টারলিংকের দাম কিছুটা বেশি। মাসিক খরচ ছয় হাজার এবং চার হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে, এটা আমরা স্টারলিংককে কিছুটা নেগোশিয়েশন করে কমিয়েছি। কিন্তু যেহেতু এটা শেয়ার্ড হবে এবং শেয়ার করা যাবে, শেয়ার করার উপর যেহেতু আমরা বিধিনিষেধ রাখিনি এবং বিক্রি করার উপরও বিধিনিষেধ রাখিনি। সেজন্য এই ইন্টারনেট দিয়ে সফল ব্যবসা মডেল, এসএমই বা ব্যবসা মডেল তৈরি করা সম্ভব।

 

পাশাপাশি কেউ যদি এই স্টারলিংক ব্যবহার করে তা ইন্টারনেট নিয়ে (মোবিলিটি এবং রোমিং সুবিধা ছাড়া) সেটাকে ফিড করে ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সেখানেও আমরা কোনো বাধা রাখিনি। অর্থাৎ বাংলাদেশের এসএমই কিংবা উদ্যোক্তা বিকাশে সব ধরনের ফ্যাসিলিটি আইনগত ফ্যাসিলিটেশন রাখা হয়েছে।

 

স্টারলিংকের মাধ্যমে আমাদের মাইক্রোক্রেডিট কিংবা ইএমআই অথবা যেকোন এমএফআই/এমআরএ পদ্ধতিতে অন্য কোম্পানিগুলো ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলো চাইলে ওয়াইফাই লেডি হিসেবে নতুন একটা উদ্যোক্তার ধারা সৃষ্টি করতে পারে। যদি তারা চাইলে শুধু গ্রামীণ মহিলাদের জন্য একটি বিশেষ ঋণ দিতে পারে, ঋণের মাধ্যমে তারা স্টারলিংক নিয়ে ইন্টারনেট সেবা বিক্রয় করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভবন ছাড়াও ইনফরমাল কোওয়েবিং বিজনেসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন।

 

চলমান চীনমার্কিন বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে স্টারলিংকের ব্যবহারে অনুমতি প্রদানে কোনো প্রভাব পড়বে কী? জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিচারে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়। বাংলাদেশে /৫জি টেকনলোজিতে সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন স্থাপনে চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিটিসিএল, টেলিটক সংস্থার অধীন চীনা অর্থায়নে প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানির ভেন্ডর হিসেবেও অনেক চীনা কোম্পানি কাজ করছেন। আমরা চাই, চীন কিংবা মার্কিন ব্যবসায়ীরা যেন স্বাধীনভাবে এখানে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে উন্মুক্তভাবে ব্যবসা করতে পারেন। চীনা কোম্পানি জিডব্লিউ যদি আসতে চায়, তারা একই প্লেসে সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। উল্লেখ্য, অন্যান্য দেশের কিছু কোম্পানি যেমন Amazon Kuiper, Telesat, Satteloit, এবং Oneweb (UK) আগ্রহী। তারা এখানে ব্যবসা করলে আমরা তাদেরও একই রকম পলিসি সুবিধা দিতে প্রস্তুত।

 

আবাসিক গ্রাহকদের জন্য স্টারলিংকের দাম কি সহনীয়? এমন প্রশ্ন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, একটি ভবনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমন অনেকগুলো অ্যাপার্টমেন্ট, কন্ডোমিনিয়াম, ফ্ল্যাট থাকে। তারা বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট যারা পাশাপাশি থাকে, তারা মিলে পাশাপাশি চারটি বা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট বা কয়েকটি দুইএকটা তলা মিলে এই সার্ভিস ব্যবহার করতে পারে, তবে এক্ষেত্রে রেঞ্জ সর্বোচ্চ ২০ মিটার করতে পারবেন। সবকিছু মিলিয়ে উদ্যোক্তাদের জন্য এবং কনজিউমারদের জন্য এককালীন দামটা বেশি হলেও সেটআপ খরচটা বেশি হলেও আমার মনে হয়, এটা যখন বিতরণ করা হবে অর্থাৎ সমবায় ভিত্তিতে হবে, তখন এটার আর খুব বেশি অনুভূত হবে না।

 

রিজিওনাল প্রাইস বিবেচনায় স্টারলিংকের ব্যয় কি বাংলাদেশে বেশি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিজিওনাল যে প্রাইস আমরা বিশ্লেষণ করেছি সেখানে দেখেছি যে, রিজিওনাল প্রাইসের তুলনায় বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম। এমনকি শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের চেয়েও কম। আমরা এটা তাদের রেখেছি যাতে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে। যেহেতু বিষয়টি শেয়ার্ড হবে, একক ব্যক্তি যিনি কিনবেন, যিনি ব্যয় নির্বাহ করবেন, তার জন্য দাম বেশি হলেও শেয়ারিংয়ে কোনো সীমা না থাকায় একাধিক শেয়ারিংয়ে দাম কমে আসবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

মোংলায় কোষ্টগার্ডের “তারুন্যের উৎসব” মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন

স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই: ফয়েজ আহমদ

Update Time : ০২:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক বিফ্রিফিংয়ে তিনি কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, যার দশ দিন অতিবাহিত হয়েছে। সময় শেষ হলেই তাদের লোকাল গেটওয়ে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট, ট্যাক্স আছে, তাই ডিভাইসের বিষয়ে এনওসি নেবে।

তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে, যা সাফল্যের নির্দেশনা প্রকাশ করে। প্রথমত, ৯০ দিন আগে বাংলাদেশে কোনো এনজিএসও (ননজিওস্টেশনারি অরবিট) লাইসেন্স ছিল না। এই ৯০ দিনের মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশ একটি এনজিএসও গাইডলাইন তৈরি করেছে এবং সেটির অনুকূলে একটি অপারেটর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অপারেটর আবেদন করেছে, এবং সেই আবেদনটাও প্রসেস করে চার মাসের সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে মে এর মধ্যে এটি কমার্শিয়াল যাত্রা শুরু করতে পেরেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই ধরনের টেলিকমিউনিকেশন লাইসেন্সের রোল আউটের ইতিহাসের প্রথম অনন্য ঘটনা।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো ফাইবার পৌঁছায়নি। মাত্র ৩০ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারে ফাইবার আছে। এমতাবস্থায় মোবাইল কোম্পানিগুলোর যে সেবা প্রদান করা হয়, সেটা মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে হয়, যেটা লো ক্যাপাসিটি। বাংলাদেশে এখনও হাজার হাজার মোবাইল টাওয়ার আছে যারা শুধু ৩০০ এমবিপিএস এর একটি ব্যান্ডউইডথ দিয়ে একটি মোবাইল টাওয়ার সচল রাখে ডেটা ইন্টারনেটের জন্য এবং সেই ডেটা ইন্টারনেটটি প্রায় কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা হয়। স্টারলিঙ্কের ক্ষেত্রে মাত্র একটি সেটআপ বক্স দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে।

স্টারলিংক কি উদ্যোক্তা বান্ধব? উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট সেবা প্রদানে কীভাবে স্টারলিংক ব্যবহার করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এনজিএসও বিধিবিধান এমনভাবে করেছি যেন স্টারলিংক বা সমজাতীয় ইন্টারনেট সুবিধা উদ্যোক্তাবান্ধব হয়। অর্থাৎ, একজন উদ্যোক্তা কিংবা একাধিক উদ্যোক্তা যদি ৪৭ হাজার টাকার একটি তহবিল গঠন করেন, এই তহবিলের মাধ্যমে তারা ইন্টারনেট সেটআপ বক্স কিনবেন। কেনার মাধ্যমে তারা তাদের আশেপাশের দোকানে এই ইন্টারনেটের বিক্রি/সেবা প্রদান করতে পারবেন। ওয়াইফাই রেঞ্জ আনুমানিক ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার, এই ৫০ মিটার জোনের মধ্যে বাংলাদেশের গ্রামের গ্রোথ সেন্টারগুলোতে অনেক দোকানপাট রয়েছে। সেখানে সহজেই ইন্টারনেট সেবা একজন ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে মাল্টিপল ব্যবহার সম্ভব। আইনে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়নি। এছাড়া শহরের বাসভবনে ওয়াইফাই শেয়ারিং করে ইন্টারনেট ব্যবহার সম্ভব। স্টারলিংকের যেহেতু বিল্টইন রাউটার আছে, সেহেতু রাউটার হতে রাউটারে আইএসপি সেটআপেও ব্যবহার সম্ভব।

 

তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করব আমাদের মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি কিংবা ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশন কিংবা ব্যাংকের জন্য, যাতে এই স্টারলিংক উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থের সংস্থান হয়। পাশাপাশি যারা নাগরিক সেবার উদ্যোক্তা হবেন, তাদের জন্য স্টারলিংক কীভাবে সহজে নেওয়া যায়এর জন্যও আমরা ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজে কাজ করার পরিকল্পনা করছি। আমরা বলছি, স্টারলিংকের দাম কিছুটা বেশি। মাসিক খরচ ছয় হাজার এবং চার হাজার নির্ধারণ করা হয়েছে, এটা আমরা স্টারলিংককে কিছুটা নেগোশিয়েশন করে কমিয়েছি। কিন্তু যেহেতু এটা শেয়ার্ড হবে এবং শেয়ার করা যাবে, শেয়ার করার উপর যেহেতু আমরা বিধিনিষেধ রাখিনি এবং বিক্রি করার উপরও বিধিনিষেধ রাখিনি। সেজন্য এই ইন্টারনেট দিয়ে সফল ব্যবসা মডেল, এসএমই বা ব্যবসা মডেল তৈরি করা সম্ভব।

 

পাশাপাশি কেউ যদি এই স্টারলিংক ব্যবহার করে তা ইন্টারনেট নিয়ে (মোবিলিটি এবং রোমিং সুবিধা ছাড়া) সেটাকে ফিড করে ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সেখানেও আমরা কোনো বাধা রাখিনি। অর্থাৎ বাংলাদেশের এসএমই কিংবা উদ্যোক্তা বিকাশে সব ধরনের ফ্যাসিলিটি আইনগত ফ্যাসিলিটেশন রাখা হয়েছে।

 

স্টারলিংকের মাধ্যমে আমাদের মাইক্রোক্রেডিট কিংবা ইএমআই অথবা যেকোন এমএফআই/এমআরএ পদ্ধতিতে অন্য কোম্পানিগুলো ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলো চাইলে ওয়াইফাই লেডি হিসেবে নতুন একটা উদ্যোক্তার ধারা সৃষ্টি করতে পারে। যদি তারা চাইলে শুধু গ্রামীণ মহিলাদের জন্য একটি বিশেষ ঋণ দিতে পারে, ঋণের মাধ্যমে তারা স্টারলিংক নিয়ে ইন্টারনেট সেবা বিক্রয় করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভবন ছাড়াও ইনফরমাল কোওয়েবিং বিজনেসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন।

 

চলমান চীনমার্কিন বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে স্টারলিংকের ব্যবহারে অনুমতি প্রদানে কোনো প্রভাব পড়বে কী? জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিচারে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়। বাংলাদেশে /৫জি টেকনলোজিতে সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক ব্যাকবোন স্থাপনে চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিটিসিএল, টেলিটক সংস্থার অধীন চীনা অর্থায়নে প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানির ভেন্ডর হিসেবেও অনেক চীনা কোম্পানি কাজ করছেন। আমরা চাই, চীন কিংবা মার্কিন ব্যবসায়ীরা যেন স্বাধীনভাবে এখানে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে উন্মুক্তভাবে ব্যবসা করতে পারেন। চীনা কোম্পানি জিডব্লিউ যদি আসতে চায়, তারা একই প্লেসে সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। উল্লেখ্য, অন্যান্য দেশের কিছু কোম্পানি যেমন Amazon Kuiper, Telesat, Satteloit, এবং Oneweb (UK) আগ্রহী। তারা এখানে ব্যবসা করলে আমরা তাদেরও একই রকম পলিসি সুবিধা দিতে প্রস্তুত।

 

আবাসিক গ্রাহকদের জন্য স্টারলিংকের দাম কি সহনীয়? এমন প্রশ্ন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, একটি ভবনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমন অনেকগুলো অ্যাপার্টমেন্ট, কন্ডোমিনিয়াম, ফ্ল্যাট থাকে। তারা বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট যারা পাশাপাশি থাকে, তারা মিলে পাশাপাশি চারটি বা পাঁচটি অ্যাপার্টমেন্ট বা কয়েকটি দুইএকটা তলা মিলে এই সার্ভিস ব্যবহার করতে পারে, তবে এক্ষেত্রে রেঞ্জ সর্বোচ্চ ২০ মিটার করতে পারবেন। সবকিছু মিলিয়ে উদ্যোক্তাদের জন্য এবং কনজিউমারদের জন্য এককালীন দামটা বেশি হলেও সেটআপ খরচটা বেশি হলেও আমার মনে হয়, এটা যখন বিতরণ করা হবে অর্থাৎ সমবায় ভিত্তিতে হবে, তখন এটার আর খুব বেশি অনুভূত হবে না।

 

রিজিওনাল প্রাইস বিবেচনায় স্টারলিংকের ব্যয় কি বাংলাদেশে বেশি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিজিওনাল যে প্রাইস আমরা বিশ্লেষণ করেছি সেখানে দেখেছি যে, রিজিওনাল প্রাইসের তুলনায় বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম। এমনকি শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের চেয়েও কম। আমরা এটা তাদের রেখেছি যাতে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে। যেহেতু বিষয়টি শেয়ার্ড হবে, একক ব্যক্তি যিনি কিনবেন, যিনি ব্যয় নির্বাহ করবেন, তার জন্য দাম বেশি হলেও শেয়ারিংয়ে কোনো সীমা না থাকায় একাধিক শেয়ারিংয়ে দাম কমে আসবে।